রাশিয়া কাঁপাতে প্রস্তুত রাকিটিচরা
গতকাল রোববার রাতেই এই মৌসুমের জন্য শেষ হয়েছে এল-ক্লাসিকোর ডামাডোল। বিশ্বের সেরা সব ফুটবলারদের সাথে ক্লাসিকো লড়াইয়ে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার তিন ফুটবলারও। বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে মাঝমাঠের এই ত্রয়ী হয়ে উঠেছেন ক্লাব দুটির প্রাণভোমরা। সেই তিন জনের একজন ইভান রাকিটিচ খেলেন বার্সার হয়ে আর বাকি দুজন লুকা মদ্রিচ ও মাতিও কোভাচিচ নামেন মাদ্রিদের হয়ে।
শুধু লা-লিগার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতাতেই নয়, এই ত্রয়ী এবার প্রস্তুত আসছে রাশিয়া বিশ্বকাপের মাঠ কাঁপাতেও। সব মিলিয়ে মোট পাঁচবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। এবারের বিশ্বকাপে এই তিনের কাঁধে চেপে ক্রোয়েশিয়া বিশ্ব সেরার টুর্নামেন্টে মাঠে নামছে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া দলটি।
বয়স ও অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন যিনি তিনি মদ্রিচ। ২০১২ সালে মাদ্রিদের জার্সিতে খেলা শুরু করেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। দারুণ দক্ষতা আর প্রয়োজনে ডিভেন্সিভ মিডফিল্ডারে পরিণত হতে পারার ক্ষমতা দিয়ে ৩২ বছর বয়সী এই ক্রোয়েশিয়ান পরেছেন রিয়ালের ‘১০’ নম্বর জার্সিটা। ২০০৬ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের দলে থাকা মদ্রিচ এখন দলের অধিনায়কও। ক্রোয়েশিয়া দলের কোচ তাঁকে উপমা দিয়েছেন ‘দলের ইঞ্জিন’ হিসেবে।
মদ্রিচ যেমন মাদ্রিদের মাঝমাঠের সৈনিক তেমনি বার্সার মাঝমাঠটাও রয়েছে রাকিটিচের দখলে। নিজে গোল করেন, সতীর্থদের দিয়ে অবশ্য করানই বেশি। ক্ষিপ্র গতি আর তীক্ষ্ণ চোখে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে রাকিটিচ আঘাত হানবেন দলনায়ক আর কোভাচিচকে সঙ্গে নিয়ে। ৩০ বছর বয়সী এই প্লে-মেকার ২০১৪ বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন। রাকিটিচের ক্লাব দলের কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে চলতি মৌসুমে দলের অপরাজিত শিরোপা জেতার পেছনে ক্রোয়েশিয়ানের অবদানকে দেখছেন বড় করে।
তিন ত্রয়ীর শেষজনও গতরাতের ক্লাসিকোর লড়াইয়ে নেমেছিলেন। তবে মাদ্রিদ কোচ জেনেদিন জিদান মিডফিল্ডার কোভাচিচকে বদলি হিসেবে নামিয়েছিলেন ম্যাচের শেষদিকে। ২৩ বছর বয়সী এই যুবা আইডল মানেন মদ্রিচকে, ক্লাব দলের হয়ে খেলছেনও সেই বড় মাদ্রিদের হয়েই। ফলে ত্রয়ীর সবচেয়ে তরুণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়াও রয়েছে ক্রোয়েশীয় অধিনায়কের। ক্রোয়েশিয়ার জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে মাঠে নামা দারিও জারনা ভীষণ আশাবাদী এই তরুণ তুর্কিকে নিয়ে।
মাঝমাঠে বিশ্বের অন্যতম সেরা তিন মিডফিল্ডারকে নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যে নিজেদের আগের সেরা নৈপুণ্য তৃতীয় স্থান ছাপিয়ে উঠতে চাইবে অন্য উচ্চতায়, তেমনটা অনুমেয়ই। সেক্ষেত্রে অবশ্য তাঁদের ডিঙোতে হবে গ্রুপ পর্বের বাঁধা। যেখানে ওত পেতে আছে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার সঙ্গে পুঁচকে আইসল্যান্ডও।
তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াইটা মাঠে গড়াবে আর্জেন্টিনা আর ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের দিন ২২ জুন। বার্সার হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়া লিওনেল মেসি ও রাকিটিচ সেদিন মাঠে নামবেন প্রতিপক্ষ হিসেবে। রাশিয়ায় নিজেদের প্রথম লড়াইয়ে ১৭ জুন নাইজেরিয়ার মুখোমুখি হবে মদ্রিচরা।
No comments
Post a Comment