আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই ঘোষিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ভীতবিহ্বল মানুষ যখন লাশপোড়া গন্ধের ভেতর অন্ধকারের রাত্রি কাটাচ্ছিল তখনই বাতাসে ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হলো একটি ..স্বাধীনরাষ্ট্রের জন্মবেদনা।
সারি সারি জলপাই ট্যাংক আর ম্যাগজিনভর্তি হলদে বুলেটের নৃশংস তর্জনগর্জনের বিরুদ্ধে জাগ্রত হলো নিতান্ত সাধারণ মানুষ, যারা পাকিস্তানের জান্তা সরকারের আচরণ আর সহ্য করতে পারছিল না, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল তাদের। তাইতো- মোঘল আমল থেকে শুরু করে ইংরেজশাসন অবধি যে স্বাধীনতার স্বাদ এই সহস্র বছর ধরে ঠকতে থাকা জনগোষ্ঠীর কাছে আরব্য রজনীর কোন গল্প ছিল, যা তাদের কাছে কল্পনাবস্তুর নামান্তর ছিল, সেটিই এক সুর এক দাবী হয়ে ফুটলো কোটিপ্রাণে, রক্ত সম্ভ্রম আর বিনিদ্র রজনীর মূল্যে গঠিত হলো- পৃথিবীর সুন্দরতম ভাস্কর্য; বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে যে বিভীষিকাময় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল- দীর্ঘ নয় মাসে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলার দামাল সন্তানেরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সে যুদ্ধে বিজয় লাভ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে।

এর আগে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তনি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের নির্বিচারে গণহত্যা করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যুষে রাজধানীতে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী কূটনীতিকগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এবারই প্রথম স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু কিশোর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সারাদেশে ও বিদেশে একযোগে একই সময়ে শুদ্ধসুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হবে।

No comments

>
Powered by Blogger.